উপভোগ - ০২
আগের পর্ব - উপভোগ - ০১
দুপুরে মায়ের সাথে শুয়ে মায়ের আদর খেতে খেতে কখন অর্ক ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়াল নেই. কিন্তু ঘুমের মধ্যে কিনা ও জানেনা একটা হাসির শব্দ ওর কানে এলো. কেউ যেন হাসছে. কে হাসে? মা? কিন্তু আওয়াজ টা যেন নিচের থেকে আসছে. যেন ওর খাটের নীচে কেউ হাসছে. ঘুমের কারণে এমন হচ্ছে নাকি অন্য কিছুর কারণে সেটা অর্ক বুঝলোনা. শুধু স্বপ্ন দেখলো খালি রাস্তা দিয়ে ও বাড়ি ফিরছে. কোথাও কেউ নেই রাস্তায়. শুধু ওই বাইরে, বাকি জগৎ যেন দুপুরে ভাতঘুম দিচ্ছে. অর্কর বার বার মনে হচ্ছে ওর পেছন পেছন কেউ আসছে. একদৌড়ে ও বাড়ি ফিরে এলো ভয়. বাড়ি ফিরতে মা গেট খুললো ঠিকই কিন্তু ওর ঢোকার আগেই ওকে ধাক্কা দিয়ে কালো ছায়া মতো কিছু একটা বাড়ির ভেতর ঢুকে গেলো. আর সেই সময় আবার কানে এলো সেই অদ্ভুত নারী কণ্ঠে হাসি.
ঘুম ভাঙলো মায়ের নড়াচড়ায়. মা খাট থেকে নামছে. মানে বাবা ফিরে এসেছে. অর্ক শুয়ে রইলো. কিছুক্ষন পরেই মা আর বাবার গলার আওয়াজ পেলো ও. আর ঘুমোলোনা অর্ক. উঠে বসে রইলো. বাবা ঘরে ঢুকে ছেলেকে দেখে হেসে পাশে বসে জামা প্যান্ট খুলতে লাগলো. অর্ক ভেবেছিলো তখনি বাবাকে বলবে কিন্তু পরে ভাবলো বাবা এইমাত্র ফিরেছে. থাক.... পরে বলবে. বাবা স্নানে চলে গেলো. বাবা ফিরে এলে মা আর শোয়না, তার আগেই যতটুকু ঘুমানোর ঘুমিয়ে নেয়. অর্কও সোফায় গিয়ে বসলো আর টিভিটা চালিয়ে দেখতে লাগলো.
উফফফফফ... মানে ঘুম থেকে উঠতে না উঠতেই টিভি দেখতে বসে যাবে ছেলেটা.
মায়ের সেই বকুনি. তবে এটাকে ওতো পরোয়া করেনা অর্ক. মা এরকম রোজই বলে. ও টিভি দেখতে লাগলো. একটু পরে বাবা এসে পাশে বসলো.
এই চা নিয়ে এসো - বাবা মাকে বললো
মা : হ্যা এই যাচ্ছি..... বলে মা নীচে রান্নাঘরে চলে গেলো.
এই সুযোগ... বাবাকে নিজের দলে টানার. মা নীচে. অর্ক তাকালো বাবার দিকে. সোফায় হেলান দিয়ে চোখ বুজে রেস্ট নিচ্ছে. অর্ক উঠে বাবার কাছে গিয়ে ঘনিষ্ট হয়ে বসে আদুরে গলায় বাবাকে ডাকলো : বাবা..
বাবা চোখ খুলে ছেলেকে জড়িয়ে বললো : কি হয়েছে বাবু? আজ মাকে ছেড়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলে? ব্যাপার কি?
অর্ক ভয় ভয় গলায় বললো : বাবা আজকে না......... কি হয়েছে জানো... একটা লোক......
বাবাকে সব খুলে বললো অর্ক. ও বললো যে ও নিতে চায়নি কিন্তু লোকটা প্রায় জোর করেই ওকে মূর্তিটা দিয়ে দিয়েছেন. সব শুনে বাবা একটু সিরিয়াস ভাবেই বললো...
বাবা : উহু....কাজটা তুমি ঠিক করোনি অর্ক.... যাকে তুমি চেনোনা জানোনা তার থেকে তুমি জিনিস নেবে কেন? মা কতবার বারণ করেছে না তোমায়?
অর্ক : আমি তো ফেরত দিয়ে দিতেই চেয়েছিলাম বাবা... কিন্তু
বাবা পুরোটা না শুনেই বললেন : না...... তোমার আগে এসেই মাকে বলা উচিত ছিল.
অর্ক : মাকে বললে মা হয়তো ওটা বাইরে ফেলে দিতো, আসলে মূর্তিটা এত সুন্দর দেখতে...
বাবা : সে যাই হোক.... সে তোমায় দেবে বললো আর তুমি নিয়ে নিলে? সে কে? তোমার পরিচিত? নয়তো? তাহলে গেলে কেন তার কাছে? আবার সে তোমায় মূর্তি দিলো? তাও এমনি এমনি? ব্যাপারটা কেমন যেন লাগছে..... কই দেখি কোথায় সেটা?
অর্ক বাবার কাছ থেকে উঠে খাটের তোলা থেকে মূর্তিটা বার করে বাবার হাতে দিলো. বাবা সেটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে লাগলো. বাবা এতক্ষন চিন্তিত মুখে ছিলেন কিন্তু অর্ক দেখলো এবারে বাবা শান্ত মুখে মূর্তিটা দেখছে. তাহলে কি বাবারও মূর্তিটা ভালো লাগলো?
এর উত্তর অর্ক সঙ্গে সঙ্গে পেলো.
বাবা : বাহ্.... দারুন জিনিস তো. যে বানিয়েছে তার হাতের কাজ বেশ নিখুঁত. দারুন নিখুঁত কাজ. এটা কিসের মূর্তি? মেয়ে সেতো বোঝাই যাচ্ছে কিন্তু তাহলে আবার দুটো ডানা কেন? পরীর মূর্তি নাকি?
-কিসের মূর্তি?
কথাটা এলো পেছন থেকে. অর্ক দেখলো মা চা নিয়ে এসেছে বাবার জন্য. ও বুঝলো এবারে আর নিস্তার নেই. বাবাও বাঁচাতে পারবেনা এই যাত্রায়. মায়ের বকুনি খেতেই হবে.
মা এগিয়ে এসে চায়ের কাপটা সামনের টেবিলে রাখতেই বাবার হাতে ওই মূর্তিটা দেখতে পেলো.
মা বললো : এই? এটা কি? কোথা থেকে পেলে?
অর্ক বুঝলো ব্যাস..... হয়ে গেলো. তৈরী হও বকুনি খেতে. হয়তো দু একটা থাপ্পড় খেতেও হতে পারে. মা এমনিতে শান্ত কিন্তু রেগে গেলে... বাবারে.
কিন্তু অর্ককে অবাক করে দিয়ে ওর বাবা অতনু বাবু বললেন : আজ ফেরার পথে কিনলাম এটা. ওই অনেকদিন কোনো সাজানোর জিনিস কেনা হয়নি, তাই ভাবলাম কিছু কিনি. এটা পছন্দ হলো তাই আরকি.
অর্ক অবাক. সাথে খুশি প্রচন্ড. উফফফ এই যাত্রায় তাহলে বাবা বাঁচিয়ে দিলো.
শ্রীপর্ণা অর্থাৎ অর্কর মা বললেন : বুঝলাম... উঠলো বাই তো কটক যাই..... কথাও কিছু নেই উনি কিনে আনলেন ঘর সাজানোর মূর্তি. তাও যদি কোনো বিখ্যাত মানুষের মূর্তি হতো. এটা কি? কিসের মূর্তি এটা? বাবা.. . আবার দুটো ডানাও আছে. কি এটা?
বাবাও মায়ের কথায় ঘাবড়ে গিয়ে বললেন : ওই..... ঐতো.... ওই.. পরী... হ্যা.. পরী.
মা : পরী? পরীদের আবার লেজ থাকে নাকি? এর তো লেজ রয়েছে দেখছি... কি জানি বাবা... এ আবার কেমন পরী?
বাবা : আহা.... যে পরী হোক.... মূর্তিটা দেখো... কি নিখুঁত কাজ. জিনিসটা ভালো করে দেখো. আর্ট টা দেখো. উফফফ দারুন. এসব জিনিস ঘরে রাখলে ঘরের শোভা আরও বারে বুঝলে?
মা : হুম.... তা কত নিলো?
এই সেরেছে রে..... বাবা কি জবাব দেবে এর?
বাবা হেসে বললো : বেশি না.... যা ভেবেছি তার অনেক কমেই পেয়েছি. খুবই কম দাম.... ওতো ভেবোনা তো. আমাদের কি টাকার কি ওতো অভাব পড়েছে নাকি যে গুনে গুনে টাকা খরচ করতে হবে?
মা : সেটা করাই উচিত. যাকগে... দাও শোকেসে রেখে দি.
বাবা : শোকেসে না..... আমাদের ওই টেবিলে রাখো. চোখে পড়বে.
মা ওটা নিয়ে ঘরের একটা টেবিলে রেখে দিলো. ওখানে বেশ মানিয়েছে জিনিসটা.
মা : আমি নীচে গেলাম.... বাবার সর্দিটা একটু বেড়েছে মনে হয়. আবার জ্বর না আসে. যাই আদা দিয়ে চা করে দি বাবাকে.
বাবা : বাবার জন্য কি জ্বরের ওষুধ কিনতে হবে নাকি?
মা : না.... তোমার মা বললো অতটাও কিছু নয় তবু বয়স হচ্ছে তো..... যাই ওদের চা দিয়ে আসি.
মা আবার নীচে চলে গেলো. অর্ক ছুটে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলো. অতনু বাবুও ছেলেকে আদর করতে লাগলেন. তবে অর্ক কথা দিলো এরকম ভুল আর করবেনা.
কিন্তু ওই একটা ভুলই যথেষ্ট ছিল.
অর্ক দাদুর ঘরে. দাদুর একটু শরীরটা খাড়াপ. তবে তেমন কিছু নয়. সন্ধেবেলায় বাবা বেরিয়ে তাও দাদুর জন্য জ্বরের ওষুধ কিনে এনেছে. ঠাম্মা আর মা রান্নাঘরে রাতের রান্না করছে. আর অতনু বাবু দোতলায় টিভি দেখছেন. আজ শনিবার আর কাল রবিবার. এইদুটো দিন অর্ককে ওর মা কিছুতেই পড়াতে বসাতেই পারেনা. তাই আজও ও সারা বাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছে. কখনো মায়ের কাছে যাচ্ছে, কখন দাদুর ঘরে, কখনো নিচের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরে দেখছে.
-উফফফ বাবু এমন ঘোরাঘুরি না করে ওপরে গিয়ে একটু পড় না..... মায়ের হালকা বকুনি খেয়ে অর্ক দোতলায় চলে এলো. ড্রয়িং রুমে এসে দেখলো বাবা সোফায় বসে. সামনে টিভি চলছে. কিন্তু বাবার দৃষ্টি টিভিতে নেই. বাবার দৃষ্টি হাতে ধরে থাকা ওই মূর্তিটার ওপর. ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছে ওটাকে ওর বাবা.
- কি দেখছো ওটা বাবা?
বাবা যেন কোনো খেলে ডুবে গেছিলো তাই মনেহয় অর্কর কথা কানেই যায়নি ওনার. উনি দেখছেন মূর্তিটা.
অর্ক বাবার গায়ে হাত রেখে বলল: বাবা? কি দেখছো ওটা?
এবারে ওর বাবা বললেন : হ্যা? কি? ওহ না. কিছুনা... এই মূর্তিটা.... মানে... মানে......... কি সুন্দর দেখতে...... অপূর্ব মুখটা মেয়েটার.
আবার কি ভাবতে লাগলো বাবা. অর্ক আর বাবার দিকে না তাকাই রিমোট নিয়ে চ্যানেল পাল্টিয়ে ডোরেমন দেখতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো.
রাতে খাওয়ার পরে ওরা দোতলায় উঠে এলো. এখন অর্কর দাদুর শরীরটা কিছুটা ঠিক. উনি ঘরে শুতে চলে গেলেন. শাশুড়ির সাথে বাকি কাজ সেরে অর্কর মাও ওপরে চলে এলো.
রাতে একবার করে স্নান করার অভ্যেস অতনু বাবুর. তিনি ঘুমোনোর আগে স্নান করতে ঢুকে গেলেন. বাইরের ঘরে অর্ক বসে টিভি দেখছে. একটু পরে মা উঠে এসে ছেলেকে টিভির সামনে হা করে বসে থাকতে দেখে একটু রেগেই বললেন..
মা : যতটা ধ্যান টিভিতে দিচ্ছ অতটা যদি অংকে দিতে তাহলে আর আমার চিন্তা থাকতোনা. মনে আছে আগের বারে পরীক্ষায় কত গুলো ভুল করেছিলি তুই বাবাই ?
অর্ক : মা.... প্লিস... সারাদিন তো পড়ি. এই শনিবার আর রবিবারটা ছাড়ো আমাকে প্লিস... মা সোনা মা.... আমি আবার সোমবার থেকে তোমার সব কোথা শুনবো.
মা হেসে : হ্যা... শুনে তো একেবারে উল্টে যাচ্ছ তুমি.
শ্রীপর্ণা ছেলের সাথে কথা বলছিলো এমন সময় ওদের বাথরুমের থেকে ওনার স্বামী হঠাৎ ডাকলো - হ্যা বলো
শ্রীপর্ণা বাথরুমের কাছে গিয়ে বললেন : কি হলো?
অর্কর বাবা : ডাকলে কেন?
অর্কর মা : আমি? আমি আবার তোমায় কখন ডাকলাম?
বাবা : যা বাবা.... এই একটু আগেই দরজায় টোকা দিলেনা?
মা : কি? আমি? আমিতো ছেলের সাথে কথা বলছিলাম. কি বলছো কি?
বাবা : ওমা...... সেকি....... আমি স্নান করছিলাম..... মনে হলো দরজায় টোকা দিলো কেউ. একবার না...... দুদুবার. আমি বললাম কে? কোনো জবাব নেই. তাইতো আমি দরজা খুলে তোমায় ডাকলাম.
মা : ও তুমি ভুল কিছু শুনেছ... ছাড়ো... স্নান করা হয়নি এখনও?
বাবা : হ্যা.. এই বেরোচ্ছে.... কিন্তু শ্রীপর্ণা... সত্যি বলছি... স্পষ্ট শুনলাম কেউ....
অর্কর মা ওনাকে থামিয়ে বললেন : আরে কে ডাকবে? আমি আর তোমার ছেলে তো টিভির ঘরে. ও তুমি ভুল শুনেছ. ছাড়ো... তাড়াতাড়ি করো.
রাতে শুতে শুতে ওদের সাড়ে বারোটা হয়ে গেলো. কাল ছুটি. নিশ্চিন্তে টিভি দেখে ওরা ঘুমোয়. অর্ক এই সুযোগে অনেক্ষন টিভি দেখার সুযোগ পায় নইলে অন্য দিন ওর মা আগে অনেক আগেই ঘুম পাড়িয়ে দেন. আজ ভালো একটা ফিল্ম পুরোটা দেখে ওরা শুতে শুতে ওই দেরি হয়ে গেলো. যদিও আজকের সময় ওটা ওতো দেরিও নয়.
ঘরে ঢুকে যখন ঘরের দরজা ভিজিয়ে শ্রীপর্ণা বিছানায় আসছে তখন হটাত কি দেখে অবাক হয়ে গেলেন উনি.
শ্রীপর্ণা : একি? এটা এখানে এলো কিকরে? তুই এনেছিস?
অর্ক দেখলো মা ওই আজকের নিয়ে আসা মূর্তিটার দিকে তাকিয়ে বলছে.
অর্ক : না তো... আমি আনিনি মা.
মা : তাহলে তুমি এনেছো?
বাবা একটু কিন্তু কিন্তু করে : হ্যা.... মানে..... ভাবলাম এমন একটা জিনিস বসার ঘরে রাখাটা... মানে...
মা : এমন মানে? কেমন জিনিস?
অতনু বাবু ওনার স্ত্রীকে ইশারায় আরেকবার মূর্তিটা দেখতে বললেন. শ্রীপর্ণা আবার তাকিয়ে বুঝলো ওনার স্বামী কি বলতে চাইছেন. মূর্তির শরীরে কোনো আবরণ নেই.
মা একটু রাগী ভাব করে : অতই যদি চিন্তা তবে এরম জিনিস কিনলে কেন?
বাবা : ওই..... ওয়ার্ক অফ আর্ট বলে একটা কথা আছে জানোতো... সত্যি মানে যে বানিয়েছে...
মা : হয়েছে হয়েছে... আর ওতো তারিফ না করে শুয়ে পড়ো. বাবা ঘুম পাচ্ছে খুব.
শ্রীপর্ণা অর্ককে পাশে ফিরিয়ে ঘুম পাড়াতে লাগলেন. অর্ক মাকে জড়িয়ে চোখ বুজলো.
অতনু বাবুও লাইট নিভিয়ে নাইট লাইট জ্বালিয়ে শুয়ে পড়লেন. কিছুক্ষন পরেই ঘুমিয়ে পড়লেন. কখন যেন স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন তিনি. স্বপ্ন দেখা সাধারণ ব্যাপার. কিন্তু আজকের স্বপ্ন যেন অন্যান্য দিনের তুলনায় আলাদা. সাধারণ নয়. আজ এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন উনি.
তিনি দেখলেন তিনি নিজের ঘরেই শুয়ে আছেন. পাশে কেউ নেই. শুধু তিনি একা শুয়ে. ঘরময় একটা দারুন গন্ধ. এই গন্ধ আগে কখনো পাননি তিনি. উনি এদিক ওদিক তাকালেন. তার পাশে স্ত্রী সন্তান নেই ঠিকই কিন্তু না....... তিনি একা নন. ওনার ঠিক ডান পাশে কেউ বসে আছে. বাইরের জানলা দিয়ে আসা প্রকৃতির আলোয় তিনি দেখলেন যে বসে আছে সে এক মহিলা. মুখটা স্পষ্ট নয় কিন্তু সে যে মহিলা তাতে কোনো সন্দেহ নেই.
ধড়মড় করে উঠে বসলেন ভয়. খিলখিল করে হাসির শব্দ এলো ওনার কানে.
- ভয় পেলে? আমাকে ভয় পেওনা.
বললো মেয়েটি. কি আকর্ষণ লুকিয়ে ওই আওয়াজে. গলার স্বর প্রচন্ড কামনায় ভরা.
অতনু বাবু তাও ভয় পাচ্ছেন. তিনি ঘাবড়ে গিয়ে বললেন - কে? কে আপনি?
আবার হাসির শব্দ. একটু পর মেয়েটি বললো - আমি? কি নাম বলি বলোতো? আমার যে অনেক নাম. কোনটা শুনতে চাও?
অতনু বাবু : ম.... ম... মানে? ক.. ক... কি বলছেন আপনি? আপনি কিকরে এলেন এখানে?
অন্ধকার থেকে আওয়াজ এলো - তুমিই তো আমায় এখানে নিয়ে এসেছো. এখন দেখো.. কেমন ভয় পাচ্ছ.
আবার সেই হাসি.
অতনু বাবু : আমি? কি বলছেন কি.... আপনি কে? সত্যি করে বলুন কি চাই আপনার?
মেয়েটি- তোমাকে.
অতনু : কি সব যাতা বলছেন.....কে আপনি? নিজের মুখ দেখান.
মেয়ে : আমার মুখ দেখবে? সামলাতে পারবে তো আমার রূপ? অনেকেই কিন্তু পারেনা আমায় সামলাতে...
আবার খিলখিল করে হাসি.
অতনু : আমি বলছি দেখান নিজেকে..... কে আপনি?
মহিলা এবারে অতনু বাবুর সামনে এগিয়ে এলো. বাইরের আলোয় এবারে ওই মহিলার মুখ স্পষ্ট হলো. অতনু বাবু অবাক হয়ে গেলেন.
এ কে? এমন রূপ... এমন সৌন্দর্যের অধিকারিণীও পৃথিবীতে আছে? কি রূপ... কি সৌন্দর্য... কি কামনাময় দেহ. দীর্ঘাঙ্গী সুন্দরী হাসিমুখে তাকিয়ে ওনার দিকে.
অতনু বাবু চেয়েই রইলেন. সামনে বসে থাকা অপরূপ সুন্দরীর দিকে. নীল চোখ দুটো যেন টানছে ওনাকে, ওই হাসি ওই রূপ উফফফ একবার তাকিয়ে মন ভোরবেনা একে দেখে.
মেয়েটি- কি?...... কেমন দেখতে আমায়?
অতনু বাবুর মুখ দিয়ে নিজের থেকেই বেরিয়ে এলো - অপূর্ব.
সুন্দরী আবার খিলখিল করে হেসে সেই কামুক চাহুনি দিয়ে বললো : তাই?
অতনু বাবু : কিন্তু.... কিন্তু কে আপনি?
মেয়ে : তুমি আমায় যা ইচ্ছে বলে ডাকতে পারো. আমি তোমার মুখে নিজের নাম শুনতে চাই.... তুমি বলো আমার নাম.
অতনু : আমি...?
মেয়ে : হ্যা...... তুমি বলো আমি কে?
অতনু বাবু ওই রূপে এতটাই হারিয়ে গেছিলেন যে উনি সব যেন ভুলে গেছিলেন. ভুলে গেছিলেন উনি বিবাহিত, উনি কারোর পিতা. এখন যেন তিনি শুধুই যেন পুরুষ. শুধুই একজন পুরুষ.
কিন্তু তখনি একটা আজব ব্যাপার হলো. ওই মেয়েটি এতক্ষন কামুক চাহুনিতে অতনু বাবুর দিকেই তাকিয়ে ছিল. কিন্তু এবারে হঠাৎ সে অতনু বাবুর থেকে চোখ সরিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে বিছানার মাঝের শুন্য জায়গাটাতে তাকালো.
অতনু বাবু : কি..... কি দেখছেন ওখানে?
মেয়েটি হঠাৎ বললো : আজ... আজ আমি যাই হ্যা.... আবার কাল আসবো.... আজ আমায় যেতে হবে.
এই বলে আবার অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো রূপসী.
সামনে থেকে এমন অসাধারণ রূপসী চলে যেতেই তাকে ফিরে পেতে মনটা ছটফট করে উঠলো অতনু বাবুর. কোথায় গেলো সে? কেন চলে গেলো?
কোথায় আপনি? কোথায় চলেছে গেলেন?
ঘুমটা ভেঙে গেলো অতনু বাবুর. কই? কথাও কেউ নেই.
উফফফফফ.... এসব তাহলে স্বপ্ন. কিন্তু... কিন্তু ওই মুখটা.... কি অসাধারণ রূপ তার. হঠাৎ এমন একটা রূপের মেয়েকে উনি দেখলেন কেন? কিন্তু মুখটা যেন চেনা চান লাগছে এখন. যেন মুখটা কোথাও দেখেছেন উনি. কোথায়? সেটা বুঝে উঠতে পারলেন না তিনি.
যাকগে.... একটা স্বপ্ন নিয়ে ওতো ভাবার কি আছে? ঘুমোই আবার. উনি শুয়ে পড়লেন আবার.
পরের দিন সকালে অতনু বাবু উঠে ফ্রেশ হয়ে এসে আয়নার সামনে শেভিং করছেন. ছেলে ঘুমিয়ে. শ্রীপর্ণা স্বামীর জন্য চা এনে টেবিলে রেখে ছেলেকে ডাকতে লাগলেন.
এই বাবাই?.... ওঠ বাবু...... ওঠ সকাল হয়ে গেছে সোনা... ওঠ
আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলো অর্ক. একটা হাই তুললো সে.
মা : যা ব্রাশ করেনে. খেতে দেবো. উফফ রবিবার বলে পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে.
অর্ক উঠে বাইরে এলো মায়ের সাথে. বাইরে এসে বাবাকে সেভিং করতে দেখে ওর মনে পড়ে গেলো কাল রাতের ব্যাপারটা. একবার ভাবলো মাকে আর বাবাকে বলবে ব্যাপারটা কিন্তু মা হয়তো বকবে বলে আর কিছু বল্লোনা.
সত্যি বড্ড আজব দৃশ্য দেখেছিলো ও কাল রাতে. ঘুমটা কেন যেন হঠাৎ ভেঙে গেলো. ঘর একটা বিদঘুটে গন্ধে ভর্তি. এই গন্ধ আগে কখনোই পায়নি ও. এই গন্ধ ওর কাছে অজানা. কোথা থেকে আসছে? অনেকটা যেন পোড়া কিছু কোনো জিনিস রয়েছে ঘরে. এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে ওর নিজের ডান দিকে তাকাল. বাবা ঘুমিয়ে. কিন্তু একি ! বাবার পাশে ওটা কে?
বাবার পাশে বসে ঝুঁকে বাবাকে দেখছে. ছ্যাৎ করে উঠলো ওর বুকটা. মুখ দিয়ে হালকা আওয়াজ বেরিয়ে এলো আর তখনি ওর দিকে তাকালো সেই ছায়া. কালো ছায়া কিন্তু দুটো নীল চোখ জ্বল জ্বল করছে. ঠিক তখনি সেই ছায়া বাবার কাছ থেকে সরে অন্ধকারে মিশে গেলো. ও একবার উঠে দেখার চেষ্টা করলো কিন্তু তখনি বাবাও নড়ে উঠলো দেখে ও আবার শুয়ে পড়েছিল. সত্যি হঠাৎ এমন কেন দেখলো বোঝেনি অর্ক কিন্তু ভুল কিছু দেখেছে ভেবে এড়িয়ে গেলো তখনকার মতো.
সকালের রুটি তরকারি খেয়ে হাতে বাজারের ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে গেলেন অর্কর বাবা. রবিবারটা প্রায়ই মাংস খাওয়া হয়. অর্ক নিচের বারান্দার বাইরে দালানে বল নিয়ে খেলছে. মা ওর পাশেই দাঁড়িয়ে বাগানের গাছে জল দিচ্ছে.
এমন সময় ওদের ঠিক বিপরীত দিকের বাড়ির সুজাতা মাসিমা বাইরে থেকে বেরিয়ে অর্কর বাড়ির দিকে এগিয়ে এলেন. বয়স্ক মহিলা. স্বামীর সাথে থাকেন. মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে. দুজনেই থাকেন. অর্কদের বাড়ির সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক. শ্রীপর্ণাকে মেয়ের মতোই দেখেন.
কি মা? কেমন আছিস? বললেন সুজাতা মাসিমা.
ওনাকে দেখে হাসিমুখে অর্কর মা ওনার কাছে এগিয়ে গেলেন. গেট খুলে বাইরে গিয়ে বললেন : আসুন না... ভেতরে.
মাসিমা : না মা.... আর আসবোনা. কিছু কাজ সারতে হবে. তা তোমার শশুর কেমন আছেন? তোমার শাশুড়ি কাল বলছিলো ওনার একটু জ্বর মতো হয়েছিল.
অর্কর মা : না.... এখন বেশ ভালো. আসলে জ্বর সেইভাবে আসার আগেই ওষুধ নিয়ে নিয়েছিলেন.
মাসিমা : বর কি বাজারে?
অর্কর মা : হ্যা.... জানেনতো আমার ওই ছেলে আবার মাংস ভক্ত. রবিবার হলে মাংস খেতেই হবে. তাই ওর বাবাকে বাজারে পাঠালাম.
মাসিমা হেসে : সে তো ছেলের আবদার রাখতেই হবে.
তারপরেই তিনি একটা অদ্ভুত কথা বললেন -
মাসিমা : তা মা..... কাল ওতো রাতে তুমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলে কেন? ঘুম আসছিলোনা?
অর্কর মা অবাক হয়ে : আমি? কখন?
মাসিমা : তা... ভালোই রাত.... আমি তখন বাথরুম করতে উঠেছি. জানোই তো আমার আবার সমস্যা আছে. তা ফিরে আসছি তখনি ওই জানলা দিয়ে বাইরে তোমাদের বাড়ির দিকে চোখ পড়লো. দেখলাম তুমি বারান্দায় চুপ করে দাঁড়িয়ে আছো.
অর্কর মা হেসে বললো : না মাসিমা.... আপনি বোধহয় ভুল দেখেছেন. আমি তো রাতে উঠিই নি. এক ঘুমে সকাল.
মাসিমা অবাক হয়ে : ওমা সেকি গো? স্পষ্ট দেখলাম বাইরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কেউ. একদম স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে. ভাবলাম একবার যাবো বারান্দায় আর গিয়ে কথা বলবো তোমার সাথে কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক হবেনা ভেবে আর গেলাম না. আর তুমি বলছো তুমি ওঠোই নি রাতে?
অর্কর মা : না মাসিমা.... আপনি হয়তো কোনো কিছুর ছায়া দেখে থাকবেন.
মাসিমা : এতটা ভুল দেখলাম মা? পুরো মনে হলো......
তারপরে নিজেই আবার বললেন : অবশ্য চশমাটা ছিলোনা চোখে. তাই হয়তো..... ভুলই দেখে থাকবো. হ্যা ভুলই হবে. তোমার বাড়িতে তো আর চোর ঢুকে বারান্দায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবেনা. হা... হা.... যাই হোক.. যাই মা.... উনি একা.... এলাম.
অর্কর মা : হ্যা.... আসুন. পরে আসবেন.
উনি নিজের ঘরে চলে গেলেন. অর্কর মা নিচ থেকে নিজেও একবার ওপরে বারান্দায় তাকালো. আর ভাবলো বয়স্কা মহিলা.... কি দেখতে কি দেখেছে. ভুল তো হতেই পারে.
দুপুরে আয়েশ করে খাওয়া দাওয়া হলো. মটন টা দারুন রাধে শ্রীপর্ণা. বাড়ির লোক তো চেটেপুটে খায়. তবে খাবার পরে উচ্ছিষ্ট আর মাংসের হাড় গুলো ফেলা হয়না. ভোলার জন্য রেখে দেওয়া হয়. ভোলা হলো ওদের পাড়ার পরিচিত কুকুর. রোজই দুবেলা করে আসবেই ওদের বাড়ির কাছে. অর্ক খুব আদর করে ভোলাকে. অর্কর দাদু আর অর্ক দুজনে মিলে খেতে দেয় ভোলাকে.
সেদিনও খাবার শেষে অর্কর দাদু আর অর্ক খাবার গুলো নিয়ে বাইরে গিয়ে গেট খুলে ভোলাকে কয়েকবার ডাকতেই ভোলা দৌড়ে চলে এলো. রোজই সে চলে আসে ডাকলে. কাছেই থাকে ও. কিন্তু অন্যদিনের সাথে আজকে একটা তফাৎ ঘটলো. আজ ভোলা দৌড়ে এলো ঠিকই কিন্তু ওদের বাড়ির কাছে আর এলোনা. ওপারে দাঁড়িয়ে লেজ নাড়তে লাগলো. অর্কর দাদু খাবার গুলো একটা থার্মোকলের থালায় এনেছিলেন. সেগুলো বাড়ির বাইরে রেখে ভোলাকে ডাকলেন. কিন্তু আশ্চর্য..... ভোলা খাবার দেখেও এগলোনা. দূর থেকেই কেউ কেউ করতে লাগলো. দাদু নাতি অবাক.
দাদু : কিরে? খাবিনা ভোলা? আয়.. আয়.. মাংস দেখ আয়
কিন্তু ভোলা এক পাও ওই বাড়ির দিকে বাড়ালোনা. শেষমেষ অনেক চেষ্টার পর অর্কর দাদু ওপারে গিয়ে একটা জায়গা দেখে থালাটা রাখতেই ভোলা হামলে পড়লো খাবারে. খুবই ক্ষুদার্ত সে. অর্কর দাদু তো অবাক. গপাগপ গিলছে ভাত মাংস ভোলা. এতোই যখন খিদে তাহলে বাড়ির সামনে এগোচ্ছিলোনা কেন কুকুরটা?
বিকেলের দিকে দাদুর সাথে হাঁটতে বেরোয় অর্ক. মাঠে যায় ওরা. খুব দূরে নয়. কাছেই একটা বড়ো মাঠ আছে. ওখানে কিছুক্ষন নাতির সাথে ঘোরাঘুরি করেন. এতে হাটাহাটিও হয় আর বয়স্ক চেনা পরিচিতদের সাথে আড্ডাও হয়. ঠিক সাড়ে ছটার মধ্যেই ফিরে আসেন তারা. ফিরে আসলে অর্কর মা ছেলেকে পড়তে বসান কিন্তু রবিবারটা ছেলেকে কিছুতেই পারেন না পড়াতে বসাতে. ওর বাবাও বলেছেন - আহা.... আমাদের ছেলেটাকে এই একটা দিন না হয় ছাড় দিলে. বাকি ৫ দিন তো পড়েই ও.
শ্রীপর্ণাও জানে এই একটা দিন বেচারা বাচ্চাটাকে আনন্দ করতে দেবাই ঠিক. এখনই তো খেলে বেড়ানোর বয়স. তাই বাইরে রাগ দেখালেও নিজেই ছেলের সাথে খেলা গল্প করা সব করে.
আজকেও ছটা মতো বাজতেই অর্কর দাদু নাতিকে নিয়ে ফিরতে প্রস্তুতি নিলেন. গলির মুখেই ভোলার সাথে দেখা. অর্ক ডাকলো ভোলাকে. ভোলা রাস্তার পাশে বসে গা চুলকোচ্ছিলো. অর্কর ডাক শুনে লেজ নাড়তে নাড়তে ওর কাছে চলে এলো. অর্ক ওকে আদর করতে করতে এগিয়ে চললো.
ওরা একসময় বাড়ির সামনে পৌঁছে গেলো. কিন্তু বাড়ির গেটের কাছে পৌঁছেই ভোলা আবার কেউ কেউ করে পিছিয়ে গেলো. ব্যাপারটা লক্ষ করলেন অর্কর দাদু. অর্ক কত ডাকলো আয় ভোলা... বিস্কুট দেবো আয়.... কিন্তু ভোলা আর এক পাও এগোলো না. দূরে দাঁড়িয়ে লেজ নাড়তে লাগলো.
আশ্চর্য... যে কুকুরটা বাড়ির ভেতরে ঢুকে বসে থাকে আজ সে ভেতরে ঢোকা তো দূরের কথা বাড়ির গেটের কাছেও আসছেনা.
Comments
Post a Comment
গল্প পড়ে আপনার মতামত !!!